জ্যোতিষশাস্ত্র নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। এক সময় রাজসভায় জ্যোতিষী থাকতেন। তারা ভাগ্য গণনা করতেন। গ্রহ, নক্ষত্র বিচার করে শুভ-অশুভ বলে দিতেন। রাজতন্ত্রের কাল শেষ হলেও জ্যোতিষীরা রয়ে গেছেন সগৌরবে। কারণ ভাগ্যে অবিশ্বাসী মানুষও ভবিষ্যৎ জানতে চান। এর মধ্যে দিয়ে তারা মূলত ভালো সংবাদ প্রত্যাশা করেন। যে কারণে বিশ্ববাসী যখন খেলা নিয়ে উন্মাদনায় ভোগে, যুদ্ধ নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়, মহামারি নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে তখন তারা পরিণতি জানতে জ্যোতিষীর দ্বারস্থ হয়। অক্টোপাসও তখন আগাম বলে দেয় ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার খেলার ফল।
বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত শব্দ ‘করোনাভাইরাস’। এই ভাইরাসের কারণে স্থবির হয়ে পড়েছে বিশ্ব। জনজীবন হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত। যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, চীনের মতো দেশও এর কোনো কূল-কিনারা করতে পারছে না। করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরির জন্য দিনরাত খেটে চলেছেন বিজ্ঞানীরা। সবার মনে একটাই প্রশ্ন— কবে পৃথিবী থেকে দূর হবে এই মরণঘাতী ভাইরাস? পাশাপাশি এই ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল নিয়েও শুরু হয়েছে বিতর্ক। বিষয়টি রাজনৈতিক হলেও এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে শত কোটি প্রাণ। ফলে এর শেষ পরিণতি জানতে মানুষ আজ মরিয়া।
এরই মাঝে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে ইউটিউবে প্রকাশিত একটি ভিডিও। ‘Severe Danger To The World From Nov 2019 To April 2020’ নামের ভিডিওটি প্রকাশিত হয় গত বছর আগস্টে। এতে অভিজ্ঞ আনন্দ নামে এক কিশোর করোনাভাইরাসের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। আনন্দর ভাষ্যমতে, নভেম্বর ২০১৯ থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল— এ সময় বেশ বড় সঙ্কটে পড়বে বিশ্ববাসী। ভিডিও বার্তায় আনন্দ আরো জানিয়েছেন, ৩১ মে’র মধ্যে এর প্রকোপ কমতে শুরু করবে।
মজার ব্যাপার হলো, আনন্দের এই ভিডিও গত আগস্টে প্রকাশিত হলেও কেউ পাত্তা দেয়নি। উল্টো বালকের প্রলাপ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু গত ডিসেম্বরের পর থেকে পরিস্থিতি একটু একটু করে যখন বদলে যেতে শুরু করে তখনই আলোচনায় উঠে আসে আনন্দ। কারণ এখন সবাই জানে, পৃথিবীব্যাপী ‘সৃষ্টিকর্তা’র পর ‘করোনা’ শব্দটি বেশি উচ্চারিত হচ্ছে।
কিছুদিন আগে আরেকটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন আনন্দ। সেখানে ক্ষুদে এই জ্যোতিষীর দাবি- তার আগের হিসাব অনুযায়ী ৩১ মে’র মধ্যেও সুখবর পাবে না বিশ্ববাসী। এজন্য অপেক্ষা করতে হবে এ বছর জুনের শেষ পর্যন্ত।
তবে করোনা নিয়ে আশার বাণী শোনালেও আরো একটি বিপর্যয়ের ভবিষ্যদ্বাণী দিয়ে রেখেছেন আনন্দ। তিনি জানিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বরে আরো একটি ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে পৃথিবী, আর তা দীর্ঘস্থায়ী হবে ২০২১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত।
ভিডিওবার্তায় শুধু জ্যোতিষচর্চা নয়, সুস্থ থাকতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর প্রতি জোর দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, এ সময় কী কী খেলে মানুষ উপকার পাবে। আনন্দ নিয়মিত তুলসি পাতা খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। পাশাপাশি পানিতে কাঁচা হলুদ, জোয়ান ও আদা দিয়ে গরম করে ভাপ নিতে বলেছেন। তার মতে, এতে নাক বা কান দিয়ে ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করতে পারবে না।
আনন্দ ভিডিওতে শুধু ভবিষ্যদ্বাণী করেননি, ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। সেই ব্যাখ্যা জ্যোতিষচর্চায় অবিশ্বাসীদের কতটুকু সন্তুষ্ট করতে পেরেছে জানা না গেলেও, সাধারণ মানুষ ভিডিওটি লুফে নিয়েছে। এর ভিউয়ার এবং শেয়ার সংখ্যা তাই বলে।