কম খরচে সড়ক পথেই হিমালয়কন্যা নেপাল ভ্রমণ

ভ্রমণ

দেশের বাইরে ভ্রমণ করতে সবাই চায়, কিন্তু ভিসার ঝামেলার কারণে অনেকেরই আগ্রহ কমে যায়। কিন্তু যদি ভিসার ঝামেলা ছাড়ায় অপার সৌন্দর্যের দেশ ও হিমালয়কন্যা নেপাল থেকে ঘুরে আসা যায় তবে হয়ত আর কেউ পিছনে তাকাবে না। তবে খরচের ব্যাপারেও হয়ত মনে খচ খচ থাকতে পারে, তারও সমাধান রয়েছে। বিমানে নয় সড়ক পথেই করতে পারেন ভ্রমণ তাও আবার কম খরচে। 

সড়কপথে নেপাল যাওয়ার জন্য আপনার প্রয়োজন হবে ভারতের ট্রানজিট ভিসা। ট্রানজিট ভিসা নেওয়ার সময় এন্ট্রি এবং এক্সিট পোর্ট দেবেন চ্যাংড়াবান্ধা/ রাণীগঞ্জ। নেপালের জন্য আলাদা করে ভিসা নেওয়ার প্রয়োজন নেই। নেপালে পৌছলেই মিলবে অন অ্যারাইভাল ভিসা। এই স্টিকার ভিসা মিলবে এন্ট্রি পোর্টেই। সার্কভুক্ত দেশের নাগরিকদের জন্য একই বছরের প্রথম ভ্রমণে ভিসা ফি লাগবে না। একই বছরে দ্বিতীয়বারের মতো ভ্রমণ করতে চাইলে ১৫ দিনের মাল্টিপল ভিসার জন্য ২ হাজার ২০০ টাকা ভিসা ফি প্রদান করতে হবে। চাইলে ঢাকায় অবস্থিত নেপালের অ্যামবাসি থেকেও নিয়ে নিতে পারেন ভিসা।

বাসে বুড়িমারি বর্ডারে চলে যান সরাসরি। সেখানে ইমিগ্রেশনের যাবতীয় কাজ শেষ করে প্রবেশ করবেন চ্যাংড়াবান্ধায়। সেখানেও রয়েছে বেশকিছু কার্যক্রম। কাজ শেষে আপনাকে যেতে হবে রাণীগঞ্জ। ভারতের রাণীগঞ্জ বর্ডার দিয়েই আপনাকে ঢুকতে হবে নেপালের কাঁকড়ভিটায়। শিলিগুড়ি থেকেও বাসে সরাসরি চলে যেতে পারেন কাঁকড়ভিটা। ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে কাঁকড়ভিটা থেকে পাবেন পোখারার বাস। জনপ্রতি ১ হাজার ৫০০ রুপির মতো পড়বে খরচ। সময় লাগবে ১২ ঘণ্টার বেশি।

ফেউয়া লেক ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা চমৎকার একটি শহর পোখারা। পাহাড় ও লেকের মাঝখানে থাকা এই শহর বলা হয় নেপালের রাণী। এখান থেকেই দেখা মিলবে হিমালয় চূড়ার। একদিনের জন্য গাড়ি ভাড়া করে পোখারা ঘুরতে খরচ হবে ৫ হাজার টাকার মতো। লেক সাইডে থাকার জন্যও পেয়ে যাবেন চমৎকার সব হোটেল। খরচ ১ হাজার থেকে ২০০০ রুপির মধ্যেই।

পোখারায় প্যারাগ্লাইডিং করতে পারেন চাইলে। জনপ্রতি ৫৫ থেকে ৬০ ডলারের মতো খরচ করতে হবে প্যারাগ্লাইডিংয়ের জন্য। সারাংকোট থেকে সূর্যোদয় দেখতে ভুলবেন না। পোখারা থেকে সারাংকোট যেতে সময় লাগবে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট। এটি একটি পর্বত চূড়া। পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর সূর্যোদয় দেখা যায় এখান থেকে।

পোখারা ঘুরে চলে আসতে পারেন নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে। বাসে আসতে চাইলে জনপ্রতি ৪৫০ থেকে ৮০০ রুপির মতো খরচ পড়বে। গাড়ি রিজার্ভ করে আসতে চাইলে খরচটা বেড়ে যাবে কয়েক গুণ। সময় লাগবে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা। কাঠমান্ডু ব্যস্ত শহর। থামেলে প্রচুর ভালো মানের হোটেল মিলবে থাকার জন্য। খরচ ৬০০ থেকে ১৫০০ রুপির মধ্যেই। এখানে কেনাকাটাও করতে পারবেন ইচ্ছেমতো। তবে দামাদামি করতে হবে অনেক। দরবার স্কয়ার দেখতে পারেন।

কাঠমান্ডু বাস স্ট্যান্ড থেকে সরাসরি কাঁকড়ভিটার বাস পেয়ে যাবেন। ভাড়া পড়বে ১ হাজার ১০০ রুপি থেকে ২ হাজার রুপি পর্যন্ত। সময় লাগবে ১২ ঘণ্টার মতো। সেখান থেকে একইভাবে ফিরতি পথ ধরুন।

জেনে নিন
.চ্যাংড়াবান্ধা প্রবেশের সময় টাকা থেকে রুপি করে নিতে পারবেন।
.ভারতীয় রুপি নেপালে বহুল প্রচলিত। তাই চাইলে ভারতীয় রুপি ব্যবহার করেও দিব্যি ঘুরে আসতে পারবেন নেপাল।
.নেপালের খাবার সুস্বাদু। ভাত, রুটি, ফ্রাইড রাইস- সবই পাবেন এখানে।
.হিন্দি ও ইংরেজি জানলে সহজে যোগাযোগ করতে পারবেন স্থানীয়দের সঙ্গে।
.কেনাকাটার সময় প্রচুর দামাদামি করতে হবে। নাহলে ঠকে যাবেন।
.সঙ্গে পাসপোর্ট সাইজ ছবি ও পাসপোর্টের ফটোকপি রাখবেন অবশ্যই। সূত্র: গ্লোবাল ভয়েস অব দ্যা বেঙ্গলি কমিউনিটি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.