একটি অসাধারণ উদ্যোগ স্বেচ্ছাশ্রমে ধান কাটছেন
স্থানীয় যুবক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক
দৈনিক আজকের মেঘনা ডট কম স্টাফ রিপোর্টার লিটন সরকার বাদল,
সারাদেশে যখন কৃষকরা ধানকাটা শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির কারণে ধান কাটতে পারছে না, ঠিক তখন শেরপুরের একদল যুবকের উদ্যোগে এলাকার দরিদ্র কৃষকের পাকা ধান স্বেচ্ছায় কেটে দেওয়া হচ্ছে। শুধু এলাকার যুবসমাজই নয়; স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এসেছে এ স্বেচ্ছাশ্রমে ধান কাটায়। এলাকার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর আহবানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকও ছুটে এসেছে এ স্বেচ্ছাশ্রমের ধান কাটায়। শুক্রবার সকাল থেকে ৫০ বিঘা জমির ধান কাটার প্রাথমিক পরিকল্পনা নিয়ে দিনব্যাপি এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকার কথা বলছে আয়োজকরা।
জানা যায়, শেরপুর সদর উপজেলার চর মুছারিয়া ইউনিয়নের মুন্সিরচর গ্রামের স্থানীয় হোসাইন মারুফ ক্রীড়া চক্রের উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমে এ ধানকাটার কর্মসূচি গ্রহণ করে। তারা স্থানীয় দরিদ্র কৃষক, যাদের ধান ইতিমধ্যে পেকে গেছে কিন্তু শ্রমিকের চরা মূল্যের জন্য ধান কাটতে পারছে না তাদের ধান শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কেটে দিয়েছে। এসময় তাদের সাথে যোগ হয় স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন বয়সের মানুষ। কৃষকরাও খুশি স্বেচ্ছাশ্রমে স্থানীয় যুবকরা উদ্যোগী হয়ে ধান কেটে দেওয়ায়।
এদিকে, স্বেচ্ছাশ্রমে ধান কেটে দেওয়ার খবর পেয়ে সাবেক এক শিক্ষার্থীর আহবানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ও সভাপতি ড. মামুনও একাত্মতা ঘোষণা করে শেরপুরের ওই গ্রামে এসেছেন ধান কাটতে। তিনি জানায়, শেরপুরে স্বেচ্ছাশ্রমে এই ধান কাটা কর্মসূচিটা হলো একটি দৃষ্টান্ত ও অনুকরণীয়।
সারাদেশে এখন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ বন্ধু আছে, এখন যদি শেরপুরের এই যুবক-শিক্ষার্থীদের মতো অসহায় কৃষকের ধান কেটে দেয় তাহলে কৃষকরা উপকৃত হবে। কারণ কৃষক বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। আমি আমার এক সাবেক ছাত্রের আহবানে স্বেচ্ছায় শেরপুর এসেছি তাদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে ধান কাটতে।
স্বেচ্ছাশ্রমে ধানকাটার মূল উদ্যোক্তা ও স্থানীয় হোসাইন মারুফ ক্রীড়াচক্রের সভাপতি হোসাইন মারুফ জানায়, তারা স্থানীয় প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী ও যুবককে সাথে নিয়ে এলাকার হতদরিদ্র কৃষকের ধান কেটে দিচ্ছে। প্রথম দিন তারা ৫০ বিঘা জমির ধান কাটেন এবং এর ধারাবাহিকতায় যতদিন জমিতে পাকা ধান রয়েছে ততদিন পর্যন্ত তারা পর্যায়ক্রমে সকল কৃষকের ধান কেটে দিবেন।
এদিকে, স্বেচ্ছাশ্রমে ধানকাটা কর্মসূচিকে স্থানীয়রা ভবিষ্যতে এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে এবং দেশের অন্যত্র এর অনুকরণ করে দেশের কৃষক বাঁচাতে সকল যুবসমাজকে আহবান জানিয়েছে স্থানীয় সচেতন মহল।