উবার চালিত গাড়িতে কিশোরীকে দু’দফা ধর্ষণ, লজ্জায় আত্মহত্যা

বাংলাদেশ

দৈনিক আজকের মেঘনা
উবারে চালিত গাড়িতে চট্টগ্রামে এক কিশোরীকে দু’দফা ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ধর্ষণের ঘটনায় পোষাক শ্রমিক কিশোরী লজ্জায় আত্মহত্যা করেছে।

তথ্য সংগ্রহে -সাইফুল্লাহ্ মানসুর

ধর্ষণে অভিযুক্ত বাদশা নামের এক উবার চালক পুলিশের হাতে আটকের পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৪ এপ্রিল ওই কিশোরী আত্মহত্যার পর ঘটনার অনুসন্ধান করতে গিয়ে শনিবার মধ্যরাতে নগরীর পাঠানটুলী এলাকা থেকে উবার চালক বাদশাকে গ্রেফতার করা হয়।
তাকে আদালতে তোলার পর রোববার (২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ সফি উদ্দিন ১৬৪ ধারায় ধর্ষণের ঘটনার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ডবলমুরিং জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার আশিকুর রহমান ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জানান, ২৪ এপ্রিল সকালে ডবলমুরিং থানা এলাকার মোগলটুলির বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরী। আত্মহত্যার খবর পেয়ে পুলিশ ওই বাসা থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে।
কিশোরীর বোন ডবলমুরিং থানায় আত্মহত্যা প্ররোচণার একটি মামলা দায়ের করেন। মেয়েটিকে বাদশা নিয়মিত উত্যক্ত করত বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। ক্রমাগত যৌন নিপীড়ন সহ্য করতে না পেরে তার বোন আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়।
পুলিশ জানায়, যৌন হয়রানির মামলা তদন্ত করতে গিয়ে ধর্ষণের বিষয়টি প্রকাশ পায়। কিন্তু মৃত্যুর আগে স্বজনদের কাছে ধর্ষিত হবার বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেনি মেয়েটি। অভিযুক্ত বাদশাকে গ্রেফতারের পর পুরো বিষয়টি প্রকাশ হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত বাদশা পুলিশকে জানিয়েছে, ওই কিশোরী এবং বাদশা এক সময় একই প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করতো। কিন্তু বাদশা প্রায়ই ওই কিশোরীকে উত্যক্ত করতো। বাদশা পোশাক কারখানা থেকে চাকরি ছেড়ে দিয়ে উবার সার্ভিসের প্রাইভেট কার চালানো শুরু করে।
গত ২৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় পোশাক কারখানায় ছুটির পর বাদশা ওই কিশোরীকে প্রাইভেট কারে তুলে নেয়। প্রথমে আগ্রাবাদ বারিক বিল্ডিং এলাকায় একটি রেস্টুরেন্টে গিয়ে যৌন উত্তেজক পানীয় পান করে। এরপর মেয়েটিকে নিয়ে প্রাইভেট কারে করে আগ্রাবাদ জাম্বুরি মাঠের পাশে অন্ধকার একটি নির্জন স্থানে যায়। সেখানে গাড়ির ভেতরে দু’দফা ধর্ষণ করে। দ্বিতীয়বার ধর্ষণের সময় মেয়েটি অজ্ঞান হয়ে যায়।
পরে বাদশা ও তার মা মিলে মেয়েটিকে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসক মেয়েটির শরীর দুর্বল উল্লেখ করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়।
বাদশা ও তার মা মেয়েটিকে নিজেদের বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাত দেড়টার দিকে তাকে আবারও হাসপাতালে ভর্তি করে বাদশা পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে কিশোরীর ভগ্নিপতি হাসপাতাল থেকে তাকে বাসায় নিয়ে যায়। পরের দিন সকালে বোন চাকরিতে চলে যাবার পর একা বাসায় সে আত্মহত্যা করে।
জবানবন্দি গ্রহণের পর বাদশাকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। এছাড়া বাদশার বাসা থেকে কিশোরীর ব্যাগ, মোবাইল ও আইডি কার্ড জব্দ করে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.