গত ২২ সেপ্টেম্বর,রোজ বুধবার, গাজীপুর জেলার ধীরাশ্রম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করছিল এলাকার সন্ত্রাসী, বখাটে জনি ও তার দলবল। তারা প্রায়ই রাস্তায় দাঁড়িয়ে মেয়েদের ইভটিজিং করত। সেই সময় তাদেরকে বাধা দিতে এগিয়ে আসে অত্র বিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক মোঃ তানজির আহমেদ জুয়েল। সে সময় সন্ত্রাসী জনি ও তার দলবল চড়াও হয় পদার্থবিজ্ঞান স্যারের উপর, এলোপাথাড়ি ছুরির আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত করে দেয় স্যারের শরীর। চেষ্টা চালায় হত্যার। আশেপাশের মানুষজন চলে আসায় স্যার অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও তার শরীরে অর্ধশতাধিক সেলাই করতে হয়েছে। স্যারের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি আমাদেরকে বলেন, আমার বাবা একজন শিক্ষক (যিনি এলাকায় হিরন মাস্টার নামে পরিচিত)। তিনি তার সারাটি জীবন পার করে দিয়েছেন জ্ঞান বিতরণের এই মহান কাজে, বাবার সেই আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েই যোগ দিয়েছিলাম জ্ঞান বিতরনের এই মহান কাজে, এগিয়ে গিয়েছিলাম অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে। দুঃখজনক হলেও সত্য ,আজ শুধুমাত্র একজন শিক্ষক হওয়ার কারণে আমাকে যারা হত্যার চেষ্টা করল,তারা আজও ক্ষমতার দাপটে মুক্ত হাওয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। মামলা করার পরেও গ্রেফতার করা হয়নি আসামিদের। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন নেতাদের মাধ্যমে ফোনে হুমকি দেয়া হচ্ছে যেন মামলা তুলে নেয়া হয়। শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড । আর সেই শিক্ষার ধারক-বাহক হলেন শিক্ষক। আজ সেই শিক্ষকরাই যদি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে, এমন বর্বর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিচার না পায়, তাহলে আর কেউ ভবিষ্যতে অন্যায় এর প্রতিবাদ করতে এগিয়ে আসবে না।একটা সময় এই সোনার বাংলাদেশ পরিণত হবে সন্ত্রাসীদের আঁতুড়ঘরে। তাই আমার এই কঠিন সময়ে আমি দেশের সকল শিক্ষক ,শিক্ষার্থী এবং সকল আম জনতার প্রতি অনুরোধ করছি , আমাকে ন্যায়বিচার পেতে সাহায্য করার জন্য, আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্য। আপনারা আওয়াজ তুলুন, যাতে করে ভবিষ্যতে আর কোনো শিক্ষককে কোন ইভটিজার,বখাটে, সন্ত্রাসীর হাতে এভাবে রাজপথে রক্তাক্ত হতে না হয়।