আবারও বাড়ানো হয়েছে গ্যাসের দাম। আবাসিকে এক চুলার দাম ৭৫০ থেকে বাড়িয়ে ৯২৫ টাকা করা হয়েছে। দুই চুলায় ৮০০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৯৭৫ টাকা। রোববার (৩০ জুন) বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছে। নতুন এই দাম কার্যকর হবে সোমবার (০১ জুলাই) থেকে।
দাম বাড়ানোর নতুন এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ব্যবহৃত সিএনজি’র দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি ঘনমিটার ৪৩ টাকা। এছাড়া বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে হোটেল ও রেস্টুরেন্টের জন্য প্রতি ঘনমিটার ২৩ টাকা এবং ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের জন্য গ্যাসের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি ঘনমিটার ১৭ টাকা ৪ পয়সা।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাস প্রতি ঘনমিটার ৪ টাকা ৪৫ পয়সা, ক্যাপটিভ পাওয়ারে ১৩ টাকা ৮৫ পয়সা, সার কারখানায় ৪ টাকা ৪৫ পয়সা এবং শিল্প কারখানা ও চা বাগানে ১০ টাকা ৭০ পয়সা করা হয়েছে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম। এছাড়া মিটারভিত্তিক গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটার করা হয়েছে ১২টাকা ৬০ পয়সা।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলো কমিশনের কাছে গড়ে ১০২ ভাগ গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়। পরে মার্চ মাসে গণশুনানি করে কমিশন। শুনানির ৯০ দিনের মধ্যে দামের বিষয়ে ঘোষণা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। সেই নিয়ম অনুযায়ীই রোববার বিকেলে গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়।
বিতরণ কোম্পানিগুলো তাদের আবেদনে এলএনজির কারণে গ্যাসের দাম বাড়ানো দরকার বলে উল্লেখ করে। এতে বলা হয়, সরকার জ্বালানি চাহিদা মেটাতে এলএনজি আমদানি করছে। এখন প্রতিদিন ৪৫০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করা হচ্ছে। বছরের মাঝামাঝি সময়ে যা বেড়ে দাঁড়াবে অন্তত ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুটে। বাড়তি দরে এই গ্যাস কিনে কম দামে সরবরাহ করা হবে। এতে করে জ্বালানি খাতে বিশাল ঘাটতি তৈরি হবে। যে কারণে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করে কোম্পানিগুলো।
তারা বলছে, আমদানি করা এলএনজির প্রতি হাজার ঘনফুটের মূল্য ১০ ডলার বা ৮২০ টাকা (প্রতি ডলার ৮২ টাকা হিসাবে), অন্যদিকে দেশে উৎপাদিত প্রতিহাজার ঘনফুট গ্যাসের দাম ১২ টাকা ১৯ পয়সা। দেশের অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্র থেকে দৈনিক ২ হাজার ৭১৬ মিলিয়ন ঘনফুট এবং আমদানি করা এলএনজি ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট সরবরাহের হিসাবনিকাশ করে এবার গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
বিএআরসি আইন, ২০০৩-এর ধারা ২২ (খ) ও ৩৪ অনুযায়ী তিতাস, বাখরাবাদ, জালালাবাদ, কর্ণফুলী, সুন্দরবন ও পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানির ভোক্তা পর্যায়ে প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্যহার বাড়ানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে গ্যাসের দাম গড়ে ২২ দশমিক ৭০ শতাংশ বাড়ানো হয়। ওই বছরের মার্চ ও জুলাই থেকে দুই ধাপে তা কার্যকর করার কথা থাকলেও মার্চে দাম কার্যকর হয়। আর জুলাই মাসের দাম হাইকোর্টের আদেশে স্থগিত করা হয়।