মুন্সিগঞ্জের মেয়ে আমিনা ইন্দালিব তৃষার মর্মান্তিক বিদায়।

আন্তর্জাতিক

ডেস্ক রিপোর্টঃঃ ক্রেনের মাধ্যমে কবরস্থ করা হলো সুদর্শনা আমিনা তৃষাকে। ইনোসেন্ট চেহারার এই বাঙালি নারী কি কখনো ভেবেছিলেন– যান্ত্রিক পদ্ধতিতে তাঁর দাফন-কাফন সম্পন্ন হবে; শেষ বারের মতো দেখতে আসবে না কোন স্বজন-পরিজন; ভাগ্যে জুটবে না শেষ বিদায়ের সম্মানটুকু; আহা! ফুটফুটে তিনটি অবুঝ সন্তান রেখে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সুন্দর এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেন গুণবতী ও রুপবতী এই নারী। ছবিতে দৃশ্যমান রমণী ও তার সন্তানগুলো দেখলে বড্ড বেশি কষ্ট লাগে।

স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে নিউইয়র্কে জ্যামাইকার হাইল্যান্ড অ্যাভিনিউয়ে বাস করতেন তৃষা। তাঁর পুরো নাম আমিনা ইন্দালিব তৃষা। স্বামী বোরহান হাওলাদার। এই দম্পতির রয়েছে দু’টি মেয়ে ও একটি ছেলে। কনিষ্ঠ কন্যাটির বয়স মাত্র ১৪ মাস। এই দুধের শিশুকে এখন দেখবে কে? নিউইয়র্ক সিটির পুলিশ বিভাগ সরকারিভাবে বাচ্চাটিকে লালন-পালনে আগ্রহী। ১৯৮২ সালে জন্ম নেওয়া এই বাঙালিনী ‍বাংলার আলো-বাতাসেই বেড়ে ‍উঠেছিলেন। নিউইয়র্কে তৃষার প্রবাসজীবন মাত্র চার বছরের। তাঁর বাবার নাম মনির হোসেন হাওলাদার। পৈতৃক নিবাস মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার মধ্যপাড়া-তেলিপাড়ায়।

মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন আমিনা তৃষা। জ্বর ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে জ্যামাইকা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। মেডিকেল টেস্টের পর জানা গেলো, তিনি কোভিড-১৯ এ আকান্ত্র হয়েছেন। এই হাসপাতালে এক সপ্তাহ চিকিৎসাধিন থাকাবস্থায় ২৩ মার্চ তারিখে মৃত্যুবরণ করেন আমিনা তৃষা। তিনদিন পর তাঁকে কবরস্থ করা হয় লং আইল্যান্ডে। ক্রেন দিয়ে কবরে নামানো হলো ৩৮ বছর বয়সী এই নারীর লাশ। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া কারো লাশ দাফন করা হয় এভাবেই। হাত দিয়ে লাশ কবরে নামানোর সুযোগ নেই। সংক্রমণ হওয়ার ভয়ে। ফলে কফিনে ভরা লাশ ক্রেন দিয়ে নামানো হয় কবরে এবং ক্রেন দিয়েই কবরের মাটি দেওয়া হয়।

আমিনা তৃষার এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে মনটা কেঁদে ওঠে। তাঁর জন্য জান্নাত কামনা করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.