আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিতে চান সালমান

জাতীয়

কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে যখন সারাদেশ উত্তাল তখন শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ালেন আলোচিত ইউটিউবার, কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও অভিনেতা সালমান মুক্তাদির। গেল কয়েকদিন ধরেই শিক্ষার্থীদের পক্ষ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব ভূমিকা পালন করছেন তিনি। 

এরই মধ্যে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকালে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে এই অভিনেতা জানিয়েছেন, যে সকল ছাত্র হলে ঢুকতে পারছেন না বা হামলার শিকার হয়েছেন তাদের দায়িত্ব নেবেন তিনি।

সোমবার দিনভর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সোমবার দিবাগত রাতেও শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ।

এ ঘটনায় অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। অনেকেই আতঙ্কে হলছাড়া হয়েছেন। তাদেরই পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন সালমান মুক্তাদির।

এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, এমন কোনো ছাত্র আছেন যিনি হামলার শিকার হয়েছেন বা হলে ঢুকতে পারছেন না? আমি আপনাদের দায়িত্ব নিব। যদিও লাখ লাখ মেসেজ বা পোস্টের মাঝে তোমাদের ফিল্টার করা আমার পক্ষে অসম্ভব। তাই, যদি তোমাদের কোনো বন্ধু থাকে আমার বন্ধু তালিকাতে তাহলে তাদের মাধ্যমে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করো। আমি দুঃখিত, এটাই সর্বোচ্চ হয়তো এখন করতে পারতাম।’

সালমান আরও লিখেছেন, ‘যদি তোমাদের কোনো থাকার জায়গা প্রয়োজন হয় বা চিকিৎসা সেবার প্রয়োজন হয়, আমি আছি। মাত্রই কিছূ ভিডিও দেখলাম, যেখানে কিছু ছাত্র তাদের হলে প্রবেশ করতে পারছে না।’

শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন জানিয়ে এই অভিনেতা লেখেন, ‘আমি আবারও ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি যদি এতটুকু যথেষ্ট না হয়। আমি সত্যিই ভেঙে পড়েছি, বিব্রত বোধ করছি। জনপ্রিয় হয়েও খুবই লজ্জাবোধ করছি।’

প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলনে সোমবার উত্তাল হয়ে ওঠে ঢাবিসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়। দুপুরের দিকে ঢাবির রাজু ভাস্কর্যে এসে অবস্থান নেন কয়েকশ আন্দোলনকারী। এসময় তারা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার চেয়ে নানা স্লোগান দেন। তবে তাদের ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ স্লোগান নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আলাদা অনুষ্ঠানে তাদের স্লোগানের ভাষার তীব্র সমালোচনা করেন।

এরপর ক্যাম্পাসে সক্রিয় হয় ছাত্রলীগ। দুপুর ২টার দিকে তারা বিজয় ৭১ হলসহ বিভিন্ন হলে আন্দোলনকারীদের বাধা দেন। এ খবরে আন্দোলনকারীরা ছুটে গেলে ছাত্রলীগের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। উভয়পক্ষ ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এরপর থেকে গোটা ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

বিকেল ৪টার পর থেকে পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকে। এসময় ছাত্রলীগ আন্দোলনকারীদের ওপর লাঠি-সোটা নিয়ে আক্রমণ শুরু করে। বহু আন্দোলনকারীকে পিটিয়ে আহত করে তারা। তাদের অনেকের মাথা ফেটে যায়। আন্দোলনকারীরা কোথাও কোথাও প্রতিরোধের চেষ্টা করে। ফলে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। বিকেল ৪টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত চলা সংঘর্ষে শতাধিক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আহত হন। তাদের অধিকাংশই ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া আশপাশের অন্যান্য হাসপাতালেও গেছেন কেউ কেউ। এরপর সোমবার দিবাগত রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.