তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, অনলাইন নিউজ পোর্টালের নিবন্ধন নিয়ে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই।
রোববার (৫ আগস্ট) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সাথে ঈদ-পরবর্তী মতবিনিময় সভায় বঙ্গবন্ধুর প্রথম পুত্র শহীদ শেখ কামালের ৭১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রী এ সময় সবাইকে ঈদ-পরবর্তী শুভেচ্ছা জানান এবং বলেন, বাংলাদেশের মানুষ করোনা ও বন্যা পরিস্থিতির মধ্যেও নির্বিঘ্নে ঈদ উদযাপন করেছে, এজন্য দেশবাসীকে অভিনন্দন জানাই।
এ সময় নিবন্ধনের জন্য ৩৪টি অনলাইন নিউজপোর্টালের প্রকাশিত তালিকার পরে আরও তালিকা আসবে কি-না, সে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘অনলাইন নিবন্ধন একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা বলেছিলাম যে, ঈদের আগে যতদূর সম্ভব আমরা নিবন্ধনের জন্য যোগ্য বিবেচিত অনলাইনগুলোর তালিকা প্রকাশ করব। সরকারের সিদ্ধান্তে যে প্রক্রিয়াটি আমরা পালন করছি তা হলো, যতগুলো অনলাইন নিউজপোর্টাল নিবন্ধনের জন্য দরখাস্ত করেছে, সবগুলোই তদন্ত সংস্থার কাছে পাঠিয়েছিলাম। সম্মিলিতভাবে তদন্ত সংস্থাগুলোর কাছ থেকে আমরা যতগুলোর ব্যাপারে অনাপত্তি পেয়েছি, তার মধ্যে দৈনিক পত্রিকাগুলোর অনলাইন সংস্করণ ছাড়া সব অনলাইন নিউজপোর্টালের তালিকা প্রকাশ করেছি। দৈনিক পত্রিকার অনলাইন সংস্করণগুলো আমরা পরে একযোগে প্রকাশ করব।’
এ বিষয়ে উদ্বেগের কারণ নেই জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দেশে অনেক প্রতিষ্ঠিত এবং ভালো অনলাইনের নাম প্রকাশিত তালিকায় আপনারা পাননি, দেখেননি। আমরা তদন্ত সংস্থাগুলোকে বারবার তাগাদা দিয়েছি এবং দিচ্ছি, যাতে তারা দ্রুত প্রতিবেদন দেয়। কেউ যাতে এ নিয়ে উদ্বিগ্ন না হয়, সেজন্য এই ৩৪টির নাম প্রকাশ করার সাথে সাথে একটি বিজ্ঞপ্তিও আমরা প্রকাশ করেছিলাম। যাদের ব্যাপারেই তদন্ত সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে ইতিবাচক রিপোর্ট আসবে, সবাই নিবন্ধনের সুযোগ পাবে। এ নিয়ে উদ্বেগ বা উৎকণ্ঠার কোনো কারণ নেই। তবে যে অনলাইনগুলো যে উদ্দেশ্যে পরিচালিত হওয়া প্রয়োজন, সেই উদ্দেশ্যে পরিচালিত না হয়ে ভিন্ন উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয় অথবা নিয়ম-নীতি কিংবা সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে যে নিয়মগুলো মানা প্রয়োজন সেগুলো মানে না, সেগুলোর ব্যাপারে তো অবশ্যই তদন্ত সংস্থার রিপোর্ট যে রকম আসবে, সে রকম সিদ্ধান্ত হবে।’
শেখ কামালের জন্মদিন একইসাথে আনন্দ ও বেদনার স্মৃতিবাহী
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রথম পুত্র এবং দ্বিতীয় সন্তান শহীদ শেখ কামাল ভাইয়ের জন্মদিন একইসাথে যেমন আনন্দের, তেমনই বেদনার স্মৃতিবাহী। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মানবতার বিরুদ্ধে যে অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল, তখন পিতা বঙ্গবন্ধু, মাতা বঙ্গমাতা ও পরিবারের সদস্যদের সাথে তিনিও নির্মমভাবে শহীদ হন। বাংলাদেশে হত্যা-খুনের রাজনীতি চিরতরে বন্ধ হোক, এটিই তার এই পবিত্র জন্মদিনে আমাদের প্রার্থনা।’
রোববার (৫ আগস্ট) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সাথে ঈদপরবর্তী মতবিনিময় সভায় বঙ্গবন্ধুর প্রথম পুত্র শহীদ শেখ কামালের ৭১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তিনি একথা বলেন। মন্ত্রী এসময় সবাইকে ঈদপরবর্তী শুভেচ্ছা জানান এবং বলেন, বাংলাদেশের মানুষ করোনা ও বন্যা পরিস্থিতির মধ্যেও নির্বিঘ্নে ঈদ উদযাপন করেছে, এজন্য দেশবাসীকে অভিনন্দন জানাই।
মন্ত্রী বলেন, শহীদ শেখ কামাল বাংলাদেশের এক অনন্য ক্রীড়া সংগঠক যিনি আবাহনী ক্লাব প্রতিষ্ঠা করে বাংলাদেশে আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তন করেছিলেন। সংস্কৃতিমনা এই মানুষটি সেতার বাজাতেন, গান গাইতেন, ক্রিকেট খেলতেন। তাকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ প্রকৃতপক্ষে একজন ক্রীড়া সংগঠক, ক্রীড়াবিদ, সংস্কৃতিমনা প্রচণ্ড সম্ভাবনাময় মানুষকে হারিয়েছে। তার জন্মদিনে আমরা তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি, মাগফিরাত কামনা করি।
অনৈতিক কাজ : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সার্ভিস প্রোভাইডারকে জরিমানা
ওটিটি (ওভার দ্য টপ) প্লাটফর্মের বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এগুলো কীভাবে আমাদের দেশে পরিচালিত হওয়া প্রয়োজন এবং কীভাবে তারা করের আওতায় আসবে এবং আমাদের দেশের আইন, নিয়ম-কানুন, সংস্কৃতি যাতে মেনে চলে, সেজন্য কী করা প্রয়োজন, সেই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে প্রতিবেদন পেশ করার জন্য আমরা আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি করে দিয়েছি। সেই কমিটিতে তথ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে অর্থ মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, বিটিআরসি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং একজন আইনজ্ঞ রয়েছে। তারা যে আমাদের দেশ থেকে ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে নিয়ে যাচ্ছে এজন্য তারা আয়কর দিচ্ছে না। এটা অবশ্যই দেয়া প্রয়োজন। অন্যান্য দেশে এ ব্যবস্থা রয়েছে, যেমন অস্ট্রেলিয়ার মন্ত্রী বলেছেন, গণমাধ্যমের স্বার্থেই এগুলোকে করের আওতায় আনা প্রয়োজন।’
এছাড়া, এই ধরনের সার্ভিস প্রোভাইডার, অর্থাৎ ফেসবুক, টুইটার অথবা ইউটিউব বা অন্যান্য যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আছে সেগুলো ব্যবহার করে সমাজে অস্থিরতা তৈরি, ফেক নিউজ করা, কারো চরিত্র হনন করা, এই কাজগুলো যে করা হচ্ছে, সেজন্য সার্ভিস প্রোভাইডারকে জরিমানা করার জন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশে যেমন বিধান রয়েছে, আমাদের দেশেও প্রচলিত আইনে আমরা জরিমানা করতে পারি, আমরা প্রয়োজনে সেই পদক্ষেপ গ্রহণ করব— জানান ড. হাছান।
আমরা আলাপ-আলোচনা করছি, এজন্য যদি নতুন আইনের প্রয়োজন হয়, নতুন আইনও করা হবে, বলেন মন্ত্রী।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসককে তথ্যমন্ত্রীর অভিনন্দন
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নবনিযুক্ত প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও চট্টগ্রাম-৭ আসনের সংসদ সদস্য ড. হাছান মাহমুদ। সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমি চট্টগ্রামের মানুষ হিসেবে ধন্যবাদ জানাই যে, একজন মাঠের রাজনীতিবিদকে তিনি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক নিয়োগ করেছেন। তিনি একেবারেই তরুণ বয়স থেকে ছাত্র রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন, তিনি মাঠের কর্মী, সবসময় মাঠেই ছিলেন, সর্বজনশ্রদ্ধেয় ভালো মানুষ হিসেবে তার পরিচিতি রয়েছে।
‘আমি মনে করি যে, তিনি সিটি করপোরেশনকে এই ক্রান্তিকালে সঠিক নেতৃত্ব দিতে পারবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তার মতো একজন রাজনীতিবিদকে মূল্যায়ন করেছেন। এজন্য আমরা সত্যিই চট্টগ্রামের মানুষ হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই, ধন্যবাদ জানাই।